ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বার শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ সালে তার প্রথমবারের শপথে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। রীতিমতো এ বারের শপথের দিনও আমন্ত্রণ করা হয়েছিল বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। কিন্তু তিনি না এসে মোদির জন্য পাঠানো হলো হুঁশিয়ারি।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে তাদের সর্বাধুনিক, দূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ‘এস-৪০০’ কিনছে ভারত। তবে মোদির এই পদক্ষেপে একদমই সন্তুষ্ট নয় আমেরিকা। এর আগে একমাত্র চীন, ২০১৪ সালে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেয়েছে রাশিয়ার কাছ থেকে।
গতকাল ট্রাম্পের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সাংবাদিকের বলেন, ‘মস্কোর কাছ থেকে দিল্লির এস-৪০০ কেনার সিদ্ধান্ত অর্থপূর্ণ। এটা বড় কোনো ব্যাপার নয় বলে যেটা বলা হচ্ছে, সেটা আমরা মানতে পারছি না।’
একই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ভারত-মার্কিন সম্পর্কে এর ‘গুরুতর’ প্রভাব পড়বে।
গত বছর মোদির সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের সময় ৫ অক্টোবর ৫০০ কোটি ডলার দিয়ে ওই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনা নিয়ে চুক্তি হয় দুদেশের মধ্যে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিবৃতি দিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এস-৪০০ হস্তান্তর শুরু হবে ২০২০ সালে। ২০২৩ সালের মধ্যে তা শেষ হবে।
কূটনীতিকদের একটি অংশের মত, আমেরিকা থেকেও ভারত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনে এবং এটা যত দিন বাড়তে থাকবে, তত দিন রাশিয়া থেকে এস-৪০০ কেনায় ভারত-মার্কিন সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মার্কিন কর্মকর্তা স্পষ্ট বলেন, ‘আমি তা মনে করছি না। নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আমেরিকার প্রতিপক্ষ মোকাবিলার আইন (সিএএটিএসএ)-এর দিক দিয়ে ওই প্রতিরক্ষা ক্রয় তাৎপর্যপূর্ণ। ভবিষ্যতে উচ্চ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে এতে। ভারত যদি এস-৪০০ কেনা নিয়ে এগিয়ে যায়, তবে ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ক্ষেত্রে তা গুরুতর প্রভাব ফেলবে।’
তিনি মনে করিয়ে দেন, মিত্র দেশ বলে আপনা-আপনি ছাড়ের কোনো সুযোগ নেই ‘সিএএটিএসএ’-তে। প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও প্রতিটি বিষয় আলাদা আলাদা ভাবে খতিয়ে দেখা হয় এই আইনে।
মস্কো-দিল্লি সামরিক সহযোগিতা নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন-ভিন্ন ব্যবস্থাকে আমরা মেশাই না। নেটো শরিক তুরস্কের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা চলছে। ভারতের ক্ষেত্রেও সেটি প্রযোজ্য। ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে এটা খুবই স্পষ্ট যে, রাশিয়া যেখানে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে, সেখানে তাদের আধুনিক প্রযুক্তি নিলে ভুল বার্তা যাবে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।’